পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে

সূর্যের আলো সরু ছিদ্র পথে কাচের প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রতিসরিত হওয়ার কালে তা প্রিজম দ্বারা বিচ্ছুরিত (dispersion) হয়ে রঙধনুর মত সাত বর্ণের (VIBGYOR-বেনীআসহকলা) প্রশস্ত ব্যান্ড সৃষ্টি করে। সূর্যের আলোর বিচ্ছুরণের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন বর্ণের এ সমাবেশকে বর্ণালী (spectrum) বলা হয়। এক্ষেত্রে সৃষ্ট বর্ণালী অবিচ্ছিন্ন ও এতে সব স্পন্দন সংখ্যার আলো থাকে। এবার আমরা জানবো পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে।

 

পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে

এবার আমরা জানবো পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে। কোন গ্যাস বা বাষ্পকে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে বা তার মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ চালনা করলে যে আলো বের হয়, তাতে সব স্পন্দন সংখ্যার আলো থাকে না। প্রিজম বা অনুরূপ যন্ত্রের মধ্যদিয়ে চালনা করলে সৃষ্ট বর্ণালীতে বেশ কিছু একক বা যৌথ লাইন দেখা যায়, যাদের অবস্থান নির্দিষ্ট অর্থাৎ যাদের স্পন্দন-সংখ্যা নির্দিষ্ট। পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, বর্ণালীর একক লাইনগুলো (line spectrum) পরমাণু হতে উৎপন্ন। এজন্য এদেরকে পারমাণবিক রেখা বর্ণালী বা পারমাণবিক বর্ণালী (atomic spectrum) বলা হয়। তাহলে তোমরা বুঝতে পারলে পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে।

পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে

অপরদিকে বর্ণালীতে যে সমস্ত যৌথ লাইন (band spectra) দেখা যায়, তা প্রকৃতপক্ষে পরস্পরের অতি নিকটে অবস্থিত অনেক একক লাইনের সমষ্টি এবং তা অণু হতে সৃষ্ট এবং তাকে আণবিক বর্ণালী (molecular Spectrum) বলা যেতে পারে। সাধারণত যৌগের বর্ণালী এভাবে নেওয়া হয় না। বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বিকিরণের বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে যৌগের বিভিন্ন বর্ণালী গ্রহণ করা হয়। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন যে, প্রত্যেক মৌলের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রেখা বর্ণালী আছে। বর্ণালীর প্রতি রঙিন রেখা নির্দিষ্ট তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যের বা নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো শক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই বিভিন্ন উদ্বায়ী ধাতব ক্লোরাইডকে বুনসেন বার্নারের শিখায় উত্তপ্ত করলে বিভিন্ন ধাতব আয়ন বিভিন্ন বর্ণযুক্ত শিখা সৃষ্টি করে। যেমন- সোডিয়াম আয়ন থেকে সোনালী হলুদ, পটাশিয়াম আয়ন থেকে হালকা বেগুনি এবং ক্যালসিয়াম আয়ন থেকে ইটের মত লাল শিখা উৎপন্ন হয়।