গ্যাস হল সাধারণ তাপমাত্রায় ও চাপে পদার্থের একটি ভৌত অবস্থা, এ অবস্থায় আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল অপেক্ষা অণুসমূহের স্থানান্তর গতি অধিক হয়ে থাকে। যেমন, হাইড্রোজেন গ্যাস, H₂। পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে গ্যাসের সূত্র সমূহ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়। গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন-
- আকৃতি ও আয়তন : গ্যাসসমূহের কোন নির্দিষ্ট আকৃতি ও আয়তন নেই। যে পাত্রে রাখা হয়, গ্যাসসমূহ সে পাত্রের আকৃতি ও আয়তন ধারণ করে। যেকোন যল্প পরিমাণের যেকোন গ্যাস এর পাত্রের অভ্যন্তরস্থ সম্পূর্ণ স্থান দখল করে।
- গ্যাসের ঘনত্ব : গ্যাসের ঘনত্ব কম হয়। তাই অধিক চাপে গ্যাসের আয়তন হ্রাস পায়।
- চাপে আয়তনের সংকোচন: গ্যাসের আন্তঃআণবিক স্থান খুব বেশি থাকায় গ্যাস অত্যন্ত সংকোচনশীল। চাপ প্রয়োগ করলে এদের আয়তন খুব হ্রাস পায়।
- তাপে আয়তনের সম্প্রসারণ : গ্যাসের আয়তনের উপর তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাব অত্যধিক। স্থির চাপে গ্যাসসমূহের তাপীয় সম্প্রসারণ খুব বেশি। অর্থাৎ তাপ প্রয়োগে গ্যাসের আয়তন খুব বৃদ্ধি পায়।
- সমসত্ত্ব মিশ্রণ ক্ষমতা : পরস্পর বিক্রিয়াবিহীন একাধিক গ্যাস সকল অনুপাতে পরস্পরের সাথে সম্পূর্ণরূপে মিশ্রিত হয়ে সমসত্ত্ব মিশ্রণ তৈরি করে।
গ্যাসের সূত্র সমূহ কি কি?
গ্যাসের মোল সংখ্যা (n), আয়তন (V), চাপ (P) ও তাপমাত্রা (T), এদের মাঝে যে কোনো দুটি রাশিকে স্থির রেখে অপর দুটির উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা গ্যাসের ভৌত ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সূত্র আবিষ্কার করেন। এসব গ্যাসের সূত্র সমূহ ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। এরা হচ্ছে-
বয়েলের সূত্র : যা স্থির তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তনের উপর চাপের প্রভাব প্রকাশ করে।
চার্লসের বা গে লুস্যাকের সূত্র : যা গ্যাসের আয়তনের উপর তাপমাত্রার প্রভাব প্রকাশ করে। অ্যাভোগাড্রোর সূত্র : যা গ্যাসের অণুর সংখ্যা ও মোলার আয়তনের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে।
এছাড়া কেবল মিশ্র গ্যাসের জন্য আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র রয়েছে। যেমন-
ডালটনের আংশিক চাপ সূত্র : যা গ্যাস মিশ্রণের মোট চাপ এবং মিশ্রণে থাকা উপাদান গ্যাসের আংশিক চাপের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে।
গ্রাহামের ব্যাপন সূত্র : যা গ্যাসের ঘনত্ব ও ব্যাপন হার সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে।
প্রতিটা সূত্র থেকে আমরা কিছু নির্দিষ্ট সমীকরণ, সূত্রকে মেনে চলে এমন গ্রাফ, প্রতিটা গ্রাফের বিভিন্ন অবস্থা এসব নিয়ে পরের লেখা গুলোতে আলোচনা করবো।