ম্যাক্সওয়েলের বেগ বন্টন সূত্র একটা গ্যাসের অণুর গতিবেগ সম্পর্কে সচ্ছ ধারণা দেয়। যে কোন গ্যাসের সব অণু একই বেগে ধাবমান নয়। কারণ প্রতিনিয়তই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, ফলে প্রতি অণুর ভরবেগের পরিবর্তন হয়। যেহেতু যেকোন নমুনায় অনেক সংখ্যক অণু বিদ্যমান একটি নির্দিষ্ট অণুর গতিবেগ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হলেও সামগ্রিকভাবে এক একটি বিশেষ গতিবেগ বিশিষ্ট অণুর সংখ্যা সর্বদা প্রায় সমান থাকে। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (J.C. Maxwell) নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সম্ভাবনা তত্ত্বের ভিত্তিতে অণুগুলো কত অংশের বেগ কত হবে, তা হিসাব করেন। ম্যাক্সওয়েলের সম্ভাবনা তত্ত্বের সমীকরণ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলসমূহ হচ্ছে-
- যেকোন মুহূর্তে অতি নগণ্য সংখ্যক অণু গতিহীন বা অত্যন্ত কম গতিসম্পন্ন হয়।
- যেকোন মুহূর্তে অত্যন্ত উচ্চ গতিসম্পন্ন অণুর সংখ্যা অনেক কম হয়।
- যেকোন মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অণু একটি বিশেষ বেগ বা সম্ভাব্যতম বেগ লাভ করে।
- সম্ভাব্যতম বেগ হতে যতই কম বেগের দিকে অথবা যতই বেশি বেগের দিকে যাওয়া যায়, ততই সে গতি বিশিষ্ট অণুর সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে।
- গ্যাস অণুসমূহের কত অংশের বেগ কত হবে সেটা বণ্টন-বেগ তাপমাত্রা ও গ্যাসের আণবিক ভরের উপর নির্ভরশীল।
ম্যাক্সওয়েলের বেগ বন্টন সূত্র এর লেখচিত্র
লেখচিত্রাকারে ম্যাক্সওয়েলের বেগ বন্টন সূত্র প্রকাশ করলে নিচের ছবির মত একটা লেখচিত্র পাওয়া যায়। এ লেখচিত্রে যে বিন্দুটি শীর্ষে অবস্থান করে, তা সম্ভাব্যতম বেগ নির্দেশ করে। সম্ভাব্যতম বেগ বিভিন্ন গ্যাসের জন্য বিভিন্ন হয় এবং একই গ্যাসের জন্য বিভিন্ন তাপমাত্রায় বিভিন্ন হয়।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে অণুসমূহের গড় গতিবেগ বৃদ্ধি পায়, অপরদিকে গ্যাস অণুসমূহের মধ্যে গতিবেগের তারতম্য কমে যায়। ফলে কম তাপমাত্রায় লেখচিত্রটি যত খাড়া থাকে, বেশি তাপমাত্রায় তা অপেক্ষা কম খাড়া ও অধিক বিস্তার সম্পন্ন হয়। এর মানে হচ্ছে-
- তাপমাত্রার বৃদ্ধির সাথে সম্ভাব্যতম বেগ বেড়ে যায়।
- লেখচিত্রের মধ্যবর্তী এলাকার ক্ষেত্রফল স্থির থাকে, যার মাধ্যমে সর্বমোট অণুর সংখ্যা বোঝানো হয়।
- লেখচিত্রটি সব সময় মূলবিন্দু থেকে শুরু হয়।