গ্রাহামের সূত্রের সাহায্যে আণবিক ভর নির্ণয় সূত্র

গ্রাহামের সূত্র ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আণবিক ভর নির্ণয় সূত্র অনেকভাবে বের করা গেলেও এখানে আমরা দেখবো কিভাবে গ্রাহামের সূত্রের সাহায্যে আণবিক ভর নির্ণয় সূত্র বের করা যায়। যদি একই তাপমাত্রা (T) ও চাপ (P)-এ d1 ও d2 ঘনত্ব বিশিষ্ট ১ম গ্যাস ও ২য় গ্যাসের ব্যাপন বা নিঃসরণ হার যথাক্রমে r1 ও r2  হয়, এবং ১ম গ্যাস জানা আণবিক ভর বিশিষ্ট এবং ২য় গ্যাস অজনা আণবিক ভর বিশিষ্ট হয়, তবে

r1 ~ 1 / √d1

or, r1 = k / √d1 এবং,

r2 ~ 1 / √d2

or, r1 = k / √d2

এখানে K একটি ধ্রুবক।

মনে করি, একই সরু ছিদ্রের মধ্য দিয়ে উভয় গ্যাসের একই আয়তন V পরিমাণ নিঃসরণের জন্য যথাক্রমে t1 ও 12 সময় লাগে। তা হলে-

r1 = V / t1 এবং

r2 = V / t2

তাহলে, r1 / r2 = t2 / t1 = √d2 / √d1  …… (i)

আবার, ব্যাপনের হার এবং চাপ একে অপরের সমানুপাতিক। চাপ বাড়ালে ব্যাপনের হার বাড়ে, চাপ কমালে ব্যাপনের হার কমে বলে,

r ~ P

তাহলে, দুটো গ্যাসের ব্যাপনের হারের জন্য-

r1 / r2 = P1 / P2

তাই লেখা যায়-

r1 / r2 = t2 / t1 = √d2 / √d1 = P1 / P2  …… (ii)

আবার ঘনত্ব d = M / V যেখানে M = আণবিক ভর, V = মোলার আয়তন। একই তাপমাত্রা ও চাপে উভয় গ্যাসের মোলার আয়তন সমান হয়। তাই,

d1 = M1 / V এবং d2 = M2 / V

সমীকরণ (ii)-এ এই মান বসিয়ে পাওয়া যায়,

t2 / t1 = r1 / r2 = √(M2 / V) ÷ √(M1 / V) = P1 / P2

or, r1 / r2 = t2 / t1 = P1 / P2 = √M2 / √M1

সুতরাং ১ম গ্যাসটি জানা আণবিক ভরবিশিষ্ট M1 গ্যাস ও ২য় গ্যাসটি অজানা আণবিক ভরবিশিষ্ট M2 গ্যাস। একই তাপমাত্রা ও চাপে একই আকারের পৃথক দুটি ছিদ্র পথ দিয়ে উভয় গ্যাসের নিঃসরণ বা ব্যাপন ঘটানো হয় এবং সাথে সাথে ব্যাপন বা নিঃসরণের হার বা সময় মেপে অজানা আণবিক ভরবিশিষ্ট গ্যাসের আণবিক ভর বের করা যায়। এটাই গ্রাহামের সূত্রের সাহায্যে আণবিক ভর নির্ণয় সূত্র।

এখানে উল্লেখ্য যে, গ্রাহামের গ্যাস-ব্যাপন সূত্রের ক্ষেত্রে গ্যাস মিশ্রণ একক গ্যাসের ন্যায় আচরণ করে। এক্ষেত্রে গ্যাস মিশ্রণের কার্যকর আণবিক ভর উপাদান গ্যাসসমূহের শতকরা পরিমাণ বিবেচনায় রেখে তাদের আণবিক ভরের গড়ের সমান ধরা হয়।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *