বিশ্বে যত ধরণের গ্যাস রয়েছে, সব ধরণের গ্যাসের অণুর গতি থাকে। গ্যাসের গতিতত্ত্ব থেকে আমরা নিম্নরূপ গতীয় সমীকরণ পাই,
(1/3) mNc2 = PV
or, c2 = 3PV / mN
এখানে m = ১টি অণুর ভর এবং N = মোট অণুর সংখ্যা। সুতরাং mN = গৃহীত গ্যাসের ভর।
1 মোল গ্যাসের ক্ষেত্রে mNA = M গ্রাম, যেখানে M = গ্যাসের আণবিক ভর।
আবার, 1 মোল গ্যাসের জন্য PV = RT
তাহলে,
c2 = 3RT / M
or, c = √(3RT / M)
যদিও এক মোল গ্যাসের জন্য এ গ্যাসের অণুর গতি হিসাব করা হয়েছে, তা যে কোন পরিমাণ গ্যাসের জন্য প্রযোজ্য। এ সমীকরণ হতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে, কোন গ্যাসের অণুসমূহের বর্গমূল গড়-বর্গ গতিবেগ গ্যাসের আয়তন বা চাপের উপর নির্ভরশীল নয়, তা শুধুমাত্র তাপমাত্রা ও গ্যাসের আণবিক ভরের উপর নির্ভরশীল।
তাহলে মনে রাখতে হবে, গ্যাস অণুসমূহের বর্গমূল গড় বর্গ গতিবেগ পরম তাপমাত্রার বর্গমূলের সমানুপাতিক এবং গ্যাসের আণবিক ভরের বর্গমূলের ব্যস্তানুপাতিক।
গ্যাসের অণুর গতি নিয়ে অজানা তথ্য
আমাদের জানা আছে যে, গ্যাসের অণুসমূহ খুবই দ্রুতগতিতে ধাবমান হয়। হাইড্রোজেনের আণবিক ভর সবচেয়ে কম হওয়ায় এর অণুসমূহের গতিবেগ সবচেয়ে বেশি। হাইড্রোজেন অণুর বর্গমূল গড়-বৰ্গ গতিবেগ 25°C বা কক্ষতাপমাত্রায় সেকেন্ডে প্রায় 1.9 × 103m বা প্রায় 2 Km। অক্সিজেন, নাইট্রোজেন গ্যাসের অণুসমূহের বর্গমূল গড়-বর্গ গতিবেগ সেকেন্ডে প্রায় 500 m। কিছু অণুর গতিবেগ এই মান অপেক্ষা বেশি, কিছু অণুর বেগ এই মান অপেক্ষা কম।
গ্যাস অণুসমূহের এ প্রচন্ড গতির কারণে কোন গ্যাসকে পাত্রের তলদেশে রাখলেও তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করে পাত্রের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে সাধারণ অবস্থায় গ্যাস অণুসমূহ এত দ্রুত একস্থান হতে অন্যস্থানে যেতে পারে না। কেননা, প্রতিটি গ্যাস অণু তার গতিপথে অসংখ্য সংঘর্ষের সম্মুখীন হয়। ফলে তার গতির দিক বার বার পরিবর্তিত হয়। এদের গতিপথ অত্যন্ত আঁকাবাকা ধরনের এবং প্রকৃত স্থানান্তরের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে ঘরের এক স্থানে কোন সুগন্ধি গ্যাস ছেড়ে দিলে তা ঘরের আরেক প্রান্তে পৌছাতে কিছুটা সময় নেয়।
বাতাসের গ্যাস অণুসমূহের গতিবেগ খুব বেশি হলেও তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণকে সম্পূর্ণরূপে অতিক্রম করে পৃথিবীর আওতার বাইরে যেতে পারে না। চাঁদের মহাকর্ষ পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ৬ ভাগ কম। সুতরাং চাঁদ বাতাসের অণুসমূহকে ধরে রাখতে পারে না। ফলে চাঁদে কোনো বায়ুমণ্ডল নেই।