অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য

অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে বিস্তারিত জানবো এখানে আমরা।

অরবিট

  • বোর পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণুর নিউক্লিয়াসের চারদিকে ইলেকট্রনসমূহ আবর্তনের জন্য কতগুলো বৃত্তাকার স্থির কক্ষপথ বা শক্তিস্তর আছে। এ সব বৃত্তাকার স্থির শক্তিস্তরকে অরবিট বলা হয়। 
  • প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা n এর সাথে অরবিটসমূহের সম্পর্ক রয়েছে। পরমাণুর কেন্দ্রকে ঘিরে একটা বা অনেকগুলো প্রধান শক্তিস্তর থাকে যাদেরকে n = 1, 2, 3, 4… ইত্যাদি সংখ্যা দিয়ে এবং K, L, M, N.. ইত্যাদি অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয়। নিউক্লিয়াসের সবচেয়ে কাছের অরবিট হল ১ম শক্তিস্তর এবং এক্ষেত্রে n = 1 হয়। অনুরূপভাবে ২য় শক্তিস্তর বা ২য় অরবিটের ক্ষেত্রে n = 2 হয়। প্রথম অরবিট থেকে দ্বিতীয় অরবিট আকারে বড়। একই নিয়মে ৩য়, ৪র্থ, ৫ম অরবিট ক্রমান্বয়ে আকারে বড় হয়ে থাকে।
  • অরবিট দ্বারা নিউক্লিয়াসের চারদিকে দ্বিমাত্রিক বৃত্তাকার পথে ইলেকট্রন আবর্তন করে বোঝায়।
  • ইলেকট্রনের অরবিটসমূহ বৃত্তাকার (circular)।

অরবিটাল

  • অরবিটাল শব্দটির উৎস হচ্ছে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। এ বলবিদ্যা অনুসারে ইলেক্ট্রনসমূহের কোন সুনির্দিষ্ট কক্ষপথ নেই। তবে নিউক্লিয়াসের চারদিকে কিছু স্থানে ইলেক্ট্রনসমূহের প্রাপ্তির সম্ভাবনা খুব বেশি। নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে নির্দিষ্ট শক্তিযুক্ত ইলেক্ট্রন মেঘের উচ্চ ঘনত্ব যেমন 90-95% বিশিষ্ট ত্রিমাত্রিক অঞ্চলসমূহকে অরবিটাল বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে অরবিটাল দ্বারা পরমাণুতে বিভিন্ন উপশক্তিস্তরও বোঝানো হয়।
  • অরবিটাল দ্বারা নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ত্রিমাত্রিক স্থানে (X, Y ও Z-অক্ষ বরাবর) ইলেকট্রন আবর্তন করে বোঝায়।
  • বিভিন্ন অরবিটালের আকৃতি বিভিন্ন। যেমন s অরবিটাল গোলক আকৃতির, p অরবিটাল দুটি লোববিশিষ্ট ডাম্বেলের মত, d অরবিটাল ডাবল ডাম্বেলের মত, প্রতি d অরবিটালে চারটি লোব থাকে।
  • অরবিটালসমূহ প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা n ও সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা l এর সাথে সম্পর্কিত। প্রকৃতপক্ষে এর সাথে চৌম্বকীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা অরবিটালসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত হয়।
  • সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা, l = 0 1, 2, 3, 4 হলে অরবিটালসমূহকে s, p, d, f, g দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। আরো সূক্ষ্মভাবে প্রকাশের জন্য এ সব প্রতীক চিহ্নের সাথে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা ও বিভিন্ন অক্ষের সাথে এ সব অরবিটালের দিকস্থিতিও লেখা হয়, যেমন 1s, 2s, 2px, 2py , 2pz অরবিটাল।

তাহলে অরবিট ও অরবিটালের মধ্যে পার্থক্য গুলো সহজে বোঝা গেলো।