থমসন পরমাণু মডেল

একটা পরমাণুতে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন কিভাবে বিন্যাস করা থাকে সেটা বোঝানোর জন্য যে মডেলকে ব্যবহার করা হয় তাকে পরমাণু মডেল বলে। এ পর্যন্ত অনেকগুলো পরমাণু মডেল তৈরি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম মডেল ছিল থমসন পরমাণু মডেল, তারপর রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল, তারপর বোরের পরমাণু মডেল। তবে এই তিনটি মডেল ছাড়াও পরমাণুর আরো অনেকগুলো মডেল রয়েছে, যেগুলো নিয়ে তেমন একটা আলোচনা করা হয়নি তোমাদের বইতে। এখানে আমরা থমসন মডেল নিয়ে আলোচনা করবো।

থমসন পরমাণু মডেল আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী জে জে থমসন। তিনি সর্বপ্রথম ইলেকট্রন আবিষ্কার করেন। থমসন মডেল এর অন্য দুটো নাম হচ্ছে- তরমুজ মডেল এবং কিসমিস-পুডিং মডেল। তোমরা যদি একটা তরমুজকে খুলে দেখো তবে তার মধ্যে দুটো অংশ দেখতে পাবে, তরমুজের লাল অংশ এবং তরমুজের বীজ। লাল অংশ গুলো হচ্ছে এর জলীয় অংশ এবং সম্পূর্ণ তরমুজের ভেতরে এই লাল জলীয় অংশগুলো নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যুক্ত আছে। সেইসাথে তরমুজের বীজ গুলো আলাদা আলাদা ভাবে বিভিন্ন জায়গায় যুক্ত আছে। বিজ্ঞানী থমসন তরমুজের লাল জলীয় অংশকে পরমাণুর ধনাত্মক চার্জের সাথে তুলনা করেছেন এবং তরমুজের বীজ গুলোকে পরমাণুর ইলেকট্রন বা ঋণাত্মক চার্জ এর সাথে তুলনা করেছেন। কাজেই থমসন মডেল থেকে বলা যায়, পরমাণুতে প্রায় সম্পূর্ণ অংশে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ধনাত্মক চার্জ থাকে এবং বিচ্ছিন্ন ভাবে ঋণাত্মক চার্জ বা ইলেকট্রন থাকে।

থমসন পরমাণু মডেল

এছাড়া থমসন পরমাণু সম্পর্কে আরও একটি ধারণা দেন যেটি হচ্ছে, প্রতিটা পরমাণুর ব্যাসার্ধ 10^-10 মিটার। এছাড়া পুডিং এর বিভিন্ন জায়গায় কিসমিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বলে কিসমিসকে ইলেকট্রনের সাথে তুলনা করা যায় এবং সম্পূর্ণ পুডিংয়ের খাবারের অংশটিকে ধনাত্মক চার্জের সাথে তুলনা করা যায়। তাই থমসনের এই মডেলকে কিসমিস-পুডিং মডেলও বলা হয়।